Friday, June 28, 2013

যুবকদের এবং যুবতীদের জন্য জানা জরুরি

প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষদের জানা যা জরুরি
____________________

প্রসাবের রাস্তা দিয়ে প্রসাব ছাড়াও আরো তিন রকম তরল পদার্থ বের হয়– যাকে আরবিতে মনী,মযী ও অদী বলে । এই তিনটির মধ্যে মযী ও অদী বের হলে গোসল ফরয হয় না । বরং প্রসাবের রাস্তা এবং শরীরের কোন জায়গায় বা কাপড়ে ঐ পদার্থ লাগলে তা ধুয়ে ফেলতে হবে । ওযূ অবস্থায় ওযূ নষ্ট হয়ে যাবে ।

১)মযীঃ যৌন উত্তেজনার সময় বিনা বেগে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সাদা আঠা যুক্ত যে পানি বের হয় তাকেই মযী বলে । কখনো বিনা অনুভূতিতেও এই পানি বের হয় । সাধারণতঃ যুবক ও সক্তিশালী লোকদের যৌন উত্তেজনার সময় এটা বের হয় । এই মযী সম্বন্ধে রসূলুল্ল-হ (সাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ এর জন্য ওযূ যথেষ্ট ।
—( মুসলিম : হাদিস ৬০৩ )
আর কাপড়ে লাগলে যেখানে লাগবে সেখানে এক আঁজলা (দুই হাতের তালু) পানি দিয়ে ধুয়ে দাও ।
—(তিরমিযী : হাদিস ১১০)

২)অদীঃ প্রস্রাবের পূর্বে কিংবা পরে যে গাঢ় সাদা পানি বের হয় তাকে বলে অদী। অদী সম্পর্কে 'আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন : প্রস্রাবের পর অদী বের হলে লিংগ ও অন্ডকোষ দু'টি ধুতে হবে এবং ওযূ করতে হবে। গোসল করতে হবে না । ইবন 'আব্বাসও তাই বলেন ।
—( বাইহাকী ১ম খন্ড ১১৫ পৃষ্ঠা ও ইবনুল মুনযির, ফিকহুস সুন্নাহ ১ম খন্ড ২৬ পৃষ্ঠা বরাতে আইনী তুহফা সলাতে মুস্তাফা ১ম খন্ড ২০-২১ পৃষ্ঠা )

৩) মনীঃ উত্তেজনার চূরান্ত পর্যায়ে লাম্ফ দিয়ে যে তরল পদার্থ প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে বের হয় তাকে মনী বা বীর্য বলে। বীর্য যদি কোনোরূপ বৈধ বা অবৈধ উপায়ও 'সবেগে' বের হয়, তাহলে গোসল ফরয হয় ।
—( তিরমিযী : হাদিস ১০৯ )

প্রাপ্তবয়স্কা মহিলাদের জন্য জানা একান্ত জুরুরি
____________________

প্রাপ্তবয়স্কা নারীদের প্রত্যেক মাসেই কয়েক দিন করে স্বাভাবিকভাবে যে রক্তস্রাব হয় তাকে মাসিক বা হায়িয বলে । কত বছর বয়সে এই রক্তস্রাব আরম্ভ হবে হাদীসে তার কোন বিবরণ নেই । মেয়েদের যৌবনের সর্বপ্রথম যে কয় দিন রক্তস্রাব হয় সি কয় দিনকেই হায়িযের সময়সীমা ধরে নিতে হবে ।
আর যদি তার প্রথম যৌবনে যে কয়দিন হায়িয হয়েছিল পরের সময়গুলিতে তার পূর্ব দিনগুলো ছাড়িয়ে যায় তবে পূর্বের হিসাবের দিন বাদ দিয়ে অতিরিক্ত দিনগুলোতে গোসল করে সলাত আদায় করতে হবে ।
—( তিরমিযী : হাদিস ১২৩ )
মেয়েদের প্রথম যৌবনে কতদিন স্রাব হয়েছিল তা যদি মনে না থাকে তবে তারা ৬ অথবা ৭ দিন হায়িয ধরে নিয়ে অবশিষ্ট দিনগুলিতে গোসল করে সলাত করে সলাত আদায় করবে ।
—( মিশকাত : হাদিস ৫১৬ )
যে কয়দিন হায়িয থাকবে সে দিনগুলোর নামাজ মাফ, কিন্তু হায়িয অবস্থায় রমাযানের সিয়াম ( রোযা ) না রেখে অন্য মাসে তা আদায় করতে হবে ।
—( মুসলিম : হাদিস ৬৬৯ )

নিফাস
__________

স্ত্রীলোকের সন্তান প্রসবের পর যে রক্তস্রাব হয় তাকে নিফাস বলে । নিফাসের সর্বোচ্চ সময় সীমা ৪০ দিন আর কমের কোন সীমা নেই ।
যখনই রক্তস্রাব বন্ধ হবে গোসল করে সলাত আদায় এবং সিয়াম পালন করতে হবে । নিফাস বন্ধ হবার পরও ৪০ দিন পুরো করার উদ্দেশ্যে সলাত ও সিয়াম (রোযা) বাদ দিলে শক্ত গুনাহগার হতে হবে ।
—( আইনী তুহফা সলাতে মুস্তাফা- আহলে হাদীস লাইব্রেরী ঢাকা ছাপা, ১ম খন্ড, ৬০ পৃষ্ঠা )
হায়িযের অবস্থায় যা নিষিদ্ধ নিফাসের অবস্থায়ও সে সব নিষিদ্ধ ।

ইসতিহাযা
___________

হায়িয ও নিফাসের সময় অতিক্রান্ত হবার পরও যে রক্তস্রাব হতে থাকে তাকেই আরবিতে ইসতিহাযা বলে । বাংলা ভাষায় তাকে প্রদর রোগ বলা হয় ।
মুস্তাহাযা ( যার ইসতিহাযা "প্রদর" বা "দৃষ্টি রোগ" হয়েছে ) স্ত্রীলোক পবিত্র স্ত্রীলোকের মত ।
হায়িযের ক্ষেত্রে যৌবনের প্রথম হায়িযকালে, কিংবা তা মনে না থাকলে ৬/৭ দিন এবং ৪০ দিনের পর শরীরের অংগ বিশেষ হতে রক্ত ধুয়ে ফেলে গোসল করে সলাত ইত্যাদি সমাধা করবে ।
—( তিরমিযী : হাদিস ১২৩ )
যার ইসতিহাযা হয়েছে সে এক গোসলে যুহরের ও 'আসর একত্রে, মাগরিব ও 'ইশা একত্রে আর এক গোসলে ফাজরের সলাত আদায় করবে এবং সে অবস্থায় সিয়াম ( রোযা) রাখতে পারবে ।
— ( মিশকাত : ৫১৬ )

No comments:

Post a Comment