Sunday, June 30, 2013

আযান

আযান কি এবং কেন ?
___________

নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)- এর বিখ্যাত মেরাজের সময় হতে দৈনিক পাঁচবার নামায নির্ধারিত হয়। এই পাঁচ ওয়াক্ত নামায মদিনাতে মুসলমানদের জন্য যথাযথ বিধিতে পরিণত হয়। মক্কাতে এই বিধি এভাবে দৃঢ়তা পায়নি, তার একমাত্র কারণ কুরাইশদের বিরামহীন অত্যাচার। মহান ইসলামের যে বীজ একদিন মক্কায় রোপিত হলো, তা ধীরে ধীরে মদিনায় লালন-পালন হতে থাকল। তাই বলা হয়, ইসলামের জন্ম মক্কায়, লালন মদিনায় ও সমাধি দামাস্কাসে। মদিনাতে সেই লালনের পালা আরম্ভ হলো। নামাযে মুসলমানদের আহবান করার প্রয়োজন বোধ করলেন সকলেই। তাই কেউ বললেন- ইহুদীদের মতো তুরী বাজানো হোক,কেউ বা বললেন ইংরেজদের মতো ঘন্টা বাজানো হক। কিন্তু মুসলমানরা কোনটাতেই খুশি হতে পারলেন না।

অবশেষে স্বপ্নাদিষ্ট হযরত ওমরের পরামর্শে নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নির্দেশ দিলেন- মুখে আহবান করো নামাযীগণকে এবং এটাই সবশ্রেষ্ঠ পন্থা বলে বিবেচিত হলো। মসজিদে নববীর নিকটে বানু নাজ্জার গোত্রের এক মহিলার বাড়ি ছিল। হযরত বেলাল (রাঃ) সেই বাড়ির উপরে উঠে সকলকে নামাযের জন্য জোর আওয়াজে আহবান জানাতে থাকলেন। এই আহবান হচ্ছে আযান।

প্রত্যেক ফারয্ সলাতের ওয়াক্তে আযান দেয়া সুন্নাত। রসূলুল্ল-হ (সাঃ) বলেছেন, সলাতের ওয়াক্ত হলে আযান দিবে।
—( বুখারী : হাঃ ৫৬৯ )
ক্বিবলার দিকে মুখ করে শাহাদাত আংগুলদ্বয় কানের ভিতর প্রবেশ করে আযান দিতে হবে।
—( মিশকাত : হাঃ ৬০২ )

আযান আরবি ভাষায়
__________________

Azaan.gif

অর্থঃ আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লহর রসূল। সলাতের জন্য এসো। সলাতের জন্য এসো। কল্যাণ এর জন্য এসো, মুক্তির জন্য এসো। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।
—( মুসলিম : হাঃ ৭৪৯ )

ফাজরের আযান

Azaan_Falah.gif -র পরে
Azaan_Fajr.gif (অর্থাৎ নিদ্রা হতে সলাত উত্তম) বলতে হবে।
—( মিশকাত : হাঃ ৬০১ )

আজানের জওয়াবঃ আযানের জওয়াবে মুয়াজ্জিন যা বলবেন শ্রোতারাও অনুরূপভাবে বলবে। শুধুমাত্র Azaan_Falah.gifAzaan_Salah.gif স্থলে "লা- হাওলা ওয়ালা- কূওয়াতা ইল্লা- বিল্লাহ" বলবে।
—( বুখারী : হাঃ ৫৭৮)
অতঃপর মুয়াজ্জিন ও শ্রবণকারী উভয়ই দুরূদে ইব্রাহিম পড়বে ( যে দুরূদ সালাম ফিরানোর বৈঠকে আত্তাহিয়াতু এর পর পড়তে হয়।)।
অতঃপর রসূল (সাঃ)- এর জন্য ওয়াসীলাহ্ চাইতে হয়। কারণ, যে ব্যক্তি ওয়াসীলাহ্ চায় তার জন্য রসূল (সাঃ)-এর শাফা'আত হালাল হয়ে যায়।

আযানের পর দো'আ
____________

Azaan_Dua.gif

উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রব্বা হা-যিহিদ দা'ওয়াতিত্ তা-ম্মাতি ওয়াস্ সলা-তিল ক্ব-য়িমাতি আ-তি মুহাম্মদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাযীলাতা ওয়াবা'আস্হু মাক্ব-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া'আদতাহু।

অর্থঃ এই পরিপূর্ণ আহবান ও প্রতিষ্ঠিত নামাযের প্রভু হে আল্লাহ! মুহাম্মদ (সাঃ)-কে জান্নাতের সম্মানিত স্থান, ওয়াসীলাহ্ ও মর্যাদা দান কর এবং তাকে মাকামে মাহমুদে পৌঁছে দাও, যে বিষয় তুমি পূর্বেই ওয়া'দা করেছ।
—( বুখারী : হাঃ ৫৭৯ )

No comments:

Post a Comment